টেলিগ্রাম রিপোর্ট : রাশিয়া এবং ইরানের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক দিন দিন বাড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি দাবি করেন, রাশিয়া এখন ইরানকে নজিরবিহীন সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। পাশাপাশি ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে রাশিয়াকে ড্রোন দিয়ে পাশে রয়েছে ইরান। এখন দুই দেশই যৌথভাবে ড্রোন উৎপাদনে যাচ্ছে বলে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।খবরে বলা হয়, গত দুই মাস ধরে ইরানের দেয়া সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করছে রাশিয়া। যদিও ইরান ও রাশিয়ার তরফ থেকে এমন দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। রাশিয়ার দাবি, এসব ড্রোন নিজ দেশেই তৈরি। তবে এই ড্রোনের প্রযুক্তি ইরান থেকে আনা হতে পারে বলে বিশ্বাস করেন অনেক সমর বিশেষজ্ঞ। কিরবি বলেন, ড্রোন তৈরিতে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে অংশীদারিত্ব ইউক্রেন, ইরানের প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকর হবে। রাশিয়া ইরানের সাথে অস্ত্র উন্নয়ন, প্রশিক্ষণের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে চাইছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে যে, রাশিয়া হেলিকপ্টার এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহ ইরানকে উন্নত সামরিক উপাদান সরবরাহ করতে প্রস্তুত।
এরপরেই কিরবি বলেন, ইরান এখন রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সবথেকে বড় সহায়তাকারী হয়ে উঠেছে। রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে আঘাত করার জন্য ইরানের ড্রোন ব্যবহার করছে। লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয়কে বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করছে। ইরানের কর্মকাণ্ডের ফলে আজ ইউক্রেনের মানুষ মারা যাচ্ছে। কিরবির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেন, ইরান রাশিয়ার অন্যতম প্রধান সামরিক সমর্থক হয়ে উঠেছে এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে কঠোর চুক্তির অধীনে ইরান রাশিয়ায় শত শত ড্রোন পাঠাচ্ছে। প্রতিদানে, রাশিয়া ইরানী সরকারকে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের অংশীদারদের এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বাড়াবে। বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্র একমত যে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রতি ইরানের সমর্থন আগামী মাসগুলিতে আরও বাড়বে। কারণ সামনে রাশিয়ার শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র’র দরকার পড়বে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, ইরান রাশিয়াকে কামিকাজি সুইসাইড ড্রোন সরবরাহ করেছে। এগুলো দিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করছে মস্কো। ইরান প্রথমে এটি অস্বীকার করে। কিন্তু পরে স্বীকার করে যে ইউক্রেনে যুদ্ধের অনেক আগে রাশিয়ায় সীমিত সংখ্যক ড্রোন পাঠানো হয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যদিও এসব কথা বিশ্বাস করছেন না। তিনি ইরানের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :