তিন দিবসে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রত্যাশা চাষীদের
টেলিগ্রাম রিপোর্ট
প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ৩:৫৬ অপরাহ্ণ /
২৭২২০
ইসমাইল হোসেন (ঝিকরগাছা) যশোর : ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালিতে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শতকোটি টাকার ফুল বিক্রির আশায় চাষীরা, তাই ফুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। সামনের তিন দিবসে একশো কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবে এমনটি প্রত্যাশা করছেন ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
এই তিন দিবসের আগেই মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল, মূলত ১৪ ফেব্রুয়ারী ও ২১ শে ফেব্রুয়ারী বাজার ধরতেই চাষিদের সব প্রস্তুতি চলছে। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, নাভারণ ও পানিসারা ইউনিয়নের বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস,টিউলিপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল।
চলতি মৌসুমে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ফুলের উৎপাদন কিছুটা কম তবে বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বাজার সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন ফুল চাষিরা। উৎসব পর্যন্ত ফুল ধরে রাখতে, পোকার আক্রমণ ও পচন রোধে নিচ্ছেন পরিচর্যা। চাষিদের আশা, ফুলের চাহিদা ভালো থাকায় উৎসব এগিয়ে আসার সাথে ফুলের দামও বাড়বে এবং তারা বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোরে প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ হয় এবং ফুল সেক্টরের উপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহ হয়।
ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, ভালোবাসা দিবসে রজনীগন্ধা ও ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে গাদা ফুল বিক্রি বেশি হয় । এজন্য এখন ফুলের পরিচর্যা করছি। বিশেষ করে, ফুলের মান ধরে রাখতে এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ভিটামিন ও কীটনাশক ব্যবহার করছি। আশা করছি, ভালো দামে ফুল বিক্রি করতে পারবো।
চাপাতলা গ্রামের কনক আহমেদ বলেন, আমার ও আমার ছোট ভাইয়ের ১ বিঘা ৪ কাঠা জমিতে গোলাপ বাগান রয়েছে। আমার বাগানের গোলাপগুলো লংস্টিক এবং লাল, সাদা, হলুদ, কমলা ও গোলাপি রঙের। এ রঙের ফুল ভালোবাসা দিবসে অনেক বেশি কদর থাকে। এ বছর আবহাওয়া কারণে উৎপাদন অনেক কম। গাছে এখন নতুন কুড়ি এসেছে। আর যেনো নষ্ট না হয় সেজন্য ভিটামিন স্প্রে করছি। ভালোবাসা দিবসের আগেই ফুলের দাম বাড়বে। আশা করছি, এ বছর এক একটি গোলাপ ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারবো এমনটাই প্রত্যাশা করছে।
পানিসারা গ্রামের ফুল চাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, আসন্ন তিনটি দিবসকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। গোলাপগুলো ক্যাপ পরিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া নানা ধরনের ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে, যাতে ফুল নষ্ট না হয়। এ বছর ফুলের ভালো দাম পাব, এমনটাই আশা করছি।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম মানব জমিনকে জানান, সারা বছর ফুল বিক্রি কিছুটা কম থাকলেও মূলত বেচাকেনা হয় উৎসব ঘিরে। এ মৌসুমে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিশেষ করে গোলাপ ফুলের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। তবে আসন্ন তিন দিবসকে ঘিরে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা আশা করছি।
ঝিকরগাছা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, পহেলা ফাল্গুন, ও ২১ ফেব্রুয়ারি ঘিরে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমারা আশাবাদী। এ জন্য চাষিরা ফুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :