ঢাকা ১৩ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে কোরআন তেলাওয়াতকারী কে এই ঘানিম আল মুফতাহ


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২২, ২০২২, ৬:৩১ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে কোরআন তেলাওয়াতকারী কে এই ঘানিম আল মুফতাহ

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :  কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগের সব বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে আলাদা হয়েছে। সবার মন্তব্য শালীন ও ইউনিক হয়েছে। কোনো অশ্লীলতা ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা হলো কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়েছে বিশ্বকাপের এই আসরে। ছোট্ট একটি আয়াতের  উদ্ধতি  দেন এক কাতারি তরুণ। তবে তিনি অন্যদের মতো স্বাভাবিক নন। শরীরের নিম্নাংশ নেই ২০ বছর বয়সী এই তরুণের। বিরল এক রোগ যার নাম কডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাতে শরীরের নিচের অংশ বিকলাঙ্গ হয়ে যায় ধীরে ধীরে। গর্ভাবস্থায় তার এ শারীরিক   ত্রুটি  ধরা পড়ে।

তখন অনেকেই তার মাকে গর্ভপাত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এ অবস্থায়ই তিনি সন্তানকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেন। স্বামীকে বলেন, ‘সন্তানের নিম্নাংশ নেই তো কী হয়েছে, আমিই হবো তার বাম পা, তুমি হবে ডান পা।’ পরে ডাক্তাররা বলেছিলেন, তার ১৫ বছরের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কিন্তু হাল ছাড়েননি মুফতাহ ও তার পরিবার। ২০০২ সালের ৫ মে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

এরপর নানা প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে আর বাবা-মায়ের সমর্থনে তিনি এখন নিজের পরিচয়ে পরিচিত। একাধারে ইউটিউবার, মোটিভেশনাল স্পিকার, কাতার বিশ্বকাপের অ্যাম্বাসেডর। শুধু তাই নয়, শরীরের অর্ধাংশ না থাকার পরও স্কুবা ডাইভিং, স্কেটবোর্ডিং ও পবর্তারোহণে দক্ষ এই তরুণ। কাতারের এই তরুনের নাম ঘানিম আল মুফতাহ। বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। গারসিয়া আইসক্রিম নামের একটি নিজস্ব কোম্পানি আছে মুফতাহর।

কাতারে এটির আছে ছয়টি শাখা। স্বপ্ন দেখেন একদিন প্যারা অলিম্পিকে খেলার। ২০১৮ সালে টেড এঙ কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে একটি বক্তৃতার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন মুফতাহ। পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পান। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে তার ফলোয়ার ৩ মিলিয়নের বেশি। ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের নজর কেড়েছেন ঘানিম। হলিউড অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যানের এক প্রশ্নের জবাবে পবিত্র কোরআন থেকে একটি আয়াত পড়ে শোনান।

যার অর্থ, ‘হে মানব, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছু জানেন এবং সবকিছুর খবর রাখেন’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১৩)। ঘানিম দেখিয়ে দেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জীবনে চলার পথে কোনো বাধা হতে পারে না। যদি থাকে অদম্য মনোবল।

এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আমি আমার সক্ষমতা দিয়ে আশা, সামগ্রীকতা, শান্তি ও মানবতার জন্য ঐক্যবদ্ধতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই ’২০০৯ সালে টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি লিডার্স ফাউন্ডেশন কর্তৃক একজন আনসাং হিরো বা অদৃশ্যে থাকা বীরের স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০১৪ সালে কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমদ আল-সাবাহ তাকে নিযুক্ত করেন শান্তির দূত। কাতার ফিন্যানসিয়াল সেন্টার কর্তৃপক্ষের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের দায়িত্ব পালনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সম্মাননা পুরস্কার ও পদ লাভ করেছেন। ঘানিম এখন প্যারালিম্পিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031