টেলিগ্রাম রিপোর্ট : চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারিতে গাড়ি চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ সমাপ্তি উদ্বোধনের আগের দিন শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) প্রকল্প এলাকায় গিয়ে এ কথা জানান তিনি।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে এ টানেল। এর মধ্য দিয়ে ৫ মিনিটেই চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে যাওয়া যাবে আনোয়ারায়।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শনিবার দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি উদ্বোধন করবেন। নির্মাণকাজ শেষ হলে টানেলের চূড়ান্ত উদ্বোধন করবেন সরকারপ্রধান।
সচিব বলেন, এই টানেলের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ হয়ে গেছে। শুধু এখন ফিনিশিং ওয়ার্ক চলছে। আমরা এই বছরের মধ্যে চেয়েছিলাম একটা আনন্দ দিয়ে শুরু করা যাক। আর যেহেতু একটা টিউবের পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে, এখন আমরা সেটার উদযাপন করছি। ঈদের আগে যেমন চাঁদরাত উদযাপন করি, এখন সেই চাঁদরাত এখানে।
জানুয়ারিতে কাজ পুরোপুরি শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটার দুইটা টিউব আছে। একটার পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে পুরোপুরি।
প্রকল্পটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব বলেন, এটা বাংলাদেশের জাতীয় বীরত্বের কাহিনী। একটা সবসময় নদী নিয়ে দুঃখের গান গাওয়া হতো। এখন সেই নদীর তলদেশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে অবকাঠামো উন্নয়ন বোঝানো হয়। আর সেটার চূড়ান্ত হচ্ছে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে টানেল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছেন। সেখানে যেমন দেশীয় বিনিয়োগ থাকবে, তেমন থাকবে বিদেশি বিনিয়োগ। আর তার জন্য দরকার রাস্তাঘাট, ব্রিজ আর বন্দর। এর সঙ্গে মাতারবাড়ীর একটা সম্পর্ক আছে। এ ছাড়া ঢাকার সঙ্গে কক্সবাজার যাওয়ার দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমে যাচ্ছে।
একটা উদাহরণ দিয়ে সরকারপ্রধানের মুখ্যসচিব বলেন, আপনাদের পত্রপত্রিকায় অনেকেই উদ্বিগ্ন ছিলো যে, বাংলাদেশের কী হবে। বাংলাদেশ যখন আইএমএফ আসছে, তখন তারা বাংলাদেশের প্রতিটা সেক্টর পর্যালোচনা করে দেখেছে। যদি মার্কিং করা হয় তাহলে বাংলাদেশ পাবে এ প্লাস। আর এটা এক দিনে পায়নি। বিভিন্ন নীতি ও উন্নয়ন থেকে হয়েছে। আর তারা এতে ইমপ্রেসড হয়েছে।
সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন বলেন, আগামীকাল আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যেটা নদীর নিচ দিয়ে গিয়েছে এবং এক প্রান্তে পতঙ্গো ও আরেক প্রান্তে আনোয়ারাকে সংযুক্ত করেছে, সেই টানেলের দুটো টিউবের দক্ষিণ টিউব যেটি, সেটির পূর্ত কাজের সমাপনী উদযাপন করব আমরা। এখনো ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজগুলো বাকি রয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর টিউবের পূর্তকাজ কিছুটা বাকি আছে। আমরা জানুয়ারি মাসে যান চলাচলের জন্য খুলে দেবো।
তিনি বলেন, টোটাল কাজ হয়েছে ৯৪ শতাংশের বেশি। এই টানেল উদ্বোধনে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার বাড়বে ০.১৬৬ ভাগ।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। আর সেগুলো আমরা ওভারকাম করেছি। প্রথম টিউব ১৭ মাস লাগলেও পরেরটা ১০ মাসে সম্পন্ন হয়েছে। করোনার জন্য আমরা এক মাস কাজ করতে পারি নাই।
আপনার মতামত লিখুন :