ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধু রেলসেতু দিয়ে প্রতিদিন চলবে ৮৮ ট্রেন


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১০, ২০২২, ৭:২৮ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
বঙ্গবন্ধু রেলসেতু দিয়ে প্রতিদিন চলবে ৮৮ ট্রেন

টেলিগ্রাম রিপোর্ট : যমুনা নদীতে বিদ্যমান সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দিয়ে দৈনিক ৮৮টি ট্রেন চলবে। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুর কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের আগস্টে। ট্রান্স এশিয়ান রেলরুটের অন্যতম এ সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৪৭ শতাংশ।
বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু ব্যবহার করে বর্তমানে ৪৮টি ট্রেন চলাচল করছে। ২০২৪ সালে যখন বঙ্গবন্ধু রেলসেতু উদ্বোধন হলে উত্তরবঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এতে উত্তরবঙ্গ থেকে সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে রাজধানীতে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পারাপারের সময় গতি কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিষিদ্ধ রয়েছে ব্রডগেজ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলও।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ৪২ নম্বর পিলারের পাশে যমুনা নদীতে স্থাপিত বার্জ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান এসব তথ্য জানান সাংবাদিকদের। এ সময় প্রকল্পে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। সবকাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মাসুদুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পে জাইকা জাপানি মুদ্রা ইয়ানের মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। সেজন্য চলমান ডলারের কোনো সংকট এ প্রকল্পে প্রভাব ফেলবে না। আর এখনই ব্যয় বাড়ারও সম্ভাবনা নেই। প্রকল্পে ১০০০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে, যার মধ্যে ৩০০ জন বিদেশি।
রেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার সঙ্গে ট্রেন চলাচল সহজ করবে। এ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩৬ শতাংশ।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু দিয়ে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চালানোর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নেওয়া প্রকল্পে চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেশের বৃহত্তম এ রেল সেতু নির্মাণে সাত হাজার ৭২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। প্রথম দফা ডিপিপি সংশোধনের পর সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এই রেলসেতুর দুইপাশে ০ দশমিক ০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ অ্যামব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে পাশাপাশি তিনটি স্টেশন বিল্ডিং, তিনটি প্লাটফর্ম ও শেড, তিনটি লেভেল ক্রসিং গেট ও ৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। রেল সেতুর পূর্ব পাশে লুপ লাইনসহ প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার, তেরটি কালভার্ট ও দুটি সংযোগ স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, বাংলাদেশ রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শরিফ আলম।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে সে দেশের সরকার এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়। ২০১৭ সালের মার্চে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষ হয়।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031