সাইফুল ওয়াদুদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীতে ছয় মাস পর প্রাণ ফিরে পেল শতাধিক বিঘা জমির ইরি ফসল। সোনার হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিপ টিউবয়েল থেকে বোরো ধান উৎপাদনের জন্য পানি পাওয়া শুরু করলো উপজেলার বালুভরা ইউপির বারাতৈল গ্রামের কৃষকরা।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বদলগাছী অফিস সূত্রে জানা যায়, গত আমন মৌসুমের শুরুর দিকে বারাতৈল গ্রামের ডিপ টিউবয়েলের ট্রান্সমিটার পুড়ে যায়।
এরপর স্থানীয় দুই অপারেটরের দন্দ্বে ঐ ডিপ টিউবয়েলে আর বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঐ ডিপ টিউবয়েল থেকে প্রায় ১১৫ বিঘা জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়।
ডিপ টিউবয়েলের অপারেটর শাহিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ডিপ টিউবয়েলটি আমিই পরিচালনা করে আসছি। ছয় মাস আগে ট্রান্সমিটার নষ্ট হওয়ার পর অপর এক পক্ষ এসে ঝামেলা করে। তখন থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এমপি সাহেবের হস্তক্ষেপে বিষয়টির মিমাংসা হলো। আশা করছি কাল থেকেই মাঠে পানি দিতে পারবো।
স্থানীয় বর্গাচাষী ফজলু বলেন, আমি সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে বর্গাচাষ করি। ধানের ফলন ভালো হোক বা খারাপ হোক আমাকে বোরো মৌসুমে ৭ মণ এবং আমন মৌসুমে ৭ মণ হারে ধান দিতে হয়।
কিন্তু গত আমন মৌসুমে বিঘা প্রতি মাত্র ১০/১১ মণ হারে ধান পাই। ফলে আমি অর্থনৈতিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হই। পানির ব্যবস্থা তাড়াতাড়ি হলে আমরা জমি তৈরি শুরু করবো।
একই গ্রামের ওবায়দুর রহমান ১৩ বিঘা জমিতে মাত্র ১০ মণ হারে ধান পেয়েছেন। তিনি বলেন, এমপি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তীর হস্তক্ষেপে বোরো মৌসুমের শুরুতে এই ডিপটি চালু হলো। কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা ধানের চারা রোপন করতে পারবো। পানির অভাবে আমন ধানে অর্ধেক ফলন হয়েছে। আকাশ ভালো থাকলে এবার বোরোর ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।
স্থানীয় কৃষক শামসুল ইসলাম বলেন, আমনের সময় ১৮ থেকে ২০ মণ হারে প্রতি বিঘাতে ফলন হয়। কিন্তু পানির অভাবে মাত্র ১০ মণ হারে ধান পেয়েছি। ডিপের এই সমস্যা সমাধানের জন্য এমপি সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই।
স্থানীয় সাংসদ সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তীর প্রতিনিধি আবুল হোসেন হাসেম বলেন, এমপি সাহেবের কড়া নির্দেশ মহাদেবপুর-বদলগাছী থেকে দুর্নীতি চিরতরে নির্মূল করা হবে। আর কৃষকদের ফসল উৎপাদন যাতে কোনো ভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে তিনি বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে বলেছেন। তাঁরই নির্দেশনায় আজকে আমি এখানে এই ডিপ টিউবয়েল চালু করার ব্যবস্থা করে দিতে এসেছি। আশা করছি দ্রুতই এই মাঠের কৃষকরা পানি পাবে।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বদলগাছী অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমানুর রশীদ বলেন, অপারেটরদের ঝামেলায় কিছুদিন পানি সরবরাহ বন্ধ ছিল। সবকিছু সমাধান হয়েছে। বোরো মৌসুমে পানির আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
আপনার মতামত লিখুন :