ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

বাগেরহাটের কচুয়ায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকার আখ চাষ


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১০, ২০২২, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
বাগেরহাটের কচুয়ায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকার আখ চাষ

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :  কৃষিনির্ভর বাগেরহাটে মৌসুমী সবজির পাশাপাশি দিন দিন বাড়ছে আখ চাষ। চলতি বছর জেলার কচুয়া উপজেলাতেই ২৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার আখ বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ৯৩ হেক্টর জমিতে অন্তত ৫ হাজার চাষি বিএসআরই জাতের আখ চাষ করেছেন। জেলার চাহিদা মিটিয়ে কচুয়ার আখ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে।
উপজেলার গোপালপুর, কচুয়া সদর, রাড়ীপাড়া, বাধালসহ কয়েকটি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ আখক্ষেত দেখা যায়। নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

৪০ বছর ধরে আখ চাষ করেন শওকত আলী। তিনি বলেন, প্রথম যখন এই অঞ্চলে আখ চাষ শুরু হয়, তখন আমরা অল্প কয়েকজন জড়িত ছিলাম। রোগ বালাই কম ও চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় দিন দিন আখ চাষ বাড়ছে এই উপজেলায়। অনেক কৃষক এখন আখ চাষ করেন।

চাষাবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, পূর্ণ বয়স্ক আখের মাথার কিছু অংশ চারা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সাত থেকে ১২ ইঞ্চি লম্বা খন্ড করে কেটে চারা পানিতে ভিজিয়ে রাখলে বোক (আখের গিরার কাছ থেকে ছোট চারার মতো) বের হয়। বোক বের হওয়া আখের খন্ড ভেজা মাটিতে রেখে দিলে আখের চারা তৈরি হয়। ১৫ থেকে এক মাস পর ভেজা মাটি থেকে উঠিয়ে আগে থেকে কুপিয়ে এবং চাষ দিয়ে রাখা ভিটায় (ক্ষেতে) লাগাতে হয়। চারা দেওয়া থেকে শুরু করে আখ বিক্রি পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ মাস সময় লাগে।
নাজমুল মোল্লা নামে এক চাষি বলেন, প্রতি পিস আখ ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় খুচরা বাজারে। প্রতি শতক জমিতে আখ চাষ করতে ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়ে থাকে। রোপনের পর প্রথম তিন মাস আখের সঙ্গে অন্যান্য সাথী ফসল যেমন লাল শাক, রসুন, পেঁয়াজ, মুলা, ডাটা, মরিচ, শসা ইত্যাদি চাষ করা যায়। অন্য ফসল থেকেই খরচের বড় অংশ উঠে আসে বলে জানান তিনি।
গোপালপুর এলাকার সালাম মোল্লা বলেন, দুই বিঘা জমিতে আখ চাষে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। আখের ফলন ভালো হওয়ায় এ জমি থেকে আরও লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তার।
আখচাষি মোনাম হক জানান, বর্তমান সময়ে বাজারে আখের বেশ চাহিদা থাকায় জমি থেকেই পাইকার এসে প্রতিটি আখ ১০ থেকে ৩০ টাকা করে কিনে নিছে। এতে আমার পরিবহন খরচ হচ্ছে না।
আখ ব্যবসায়ী মোতালেব মোল্লা বলেন, প্রতি মৌসুমে চাষিদের কাছ থেকে অন্তত ৫০ লাখ টাকার আখ কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করি। ক্ষেত থেকে আখ কিনতে পারলে লাভ একটু বেশি হয়। তাই সাধারণত চেষ্টা করি ক্ষেত থেকেই কেনার।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কচুয়ায় এ বছর ৯৩ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। কোনো দুর্যোগে না পড়লে এই আখ ২৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বিক্রির আশা করা হচ্ছে। আমরা চাষিদের সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকি। আশা করি চাষিদের ভালোই লাভ হবে। এছাড়া আখের সঙ্গে যাতে চাষিরা অন্যান্য সাথী ফসল চাষ করতে পারেন, সেজন্য নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031