টেলিগ্রাম রিপোর্ট : বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ নিয়ে ধীরে ধীরে কঠোর হচ্ছে সরকার। কূটনৈতিকরা যাতে বাংলাদেশের ভেতরকার বিষয়াদিতে কোনো প্রভাব বিস্তার না করতে পারে, সে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তারা যদি এ বিষয়টিতে গুরুত্ব না দেয়, সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিগত জাতীয় নির্বাচনে ভোট নিয়ে একটি মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয় সমালোচনা। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় সরকারকে। ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইতো নাওকিকে ডেকে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হয় বলে দাবি করে সরকার।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তার ভাষ্য, ‘জাপানি রাষ্ট্রদূতকে হয়তো কেউ পুশ করেছেন। যে কারণে তিনি ওই বক্তব্য দিয়েছেন। ’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারকে খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অতীতের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না দেশটি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে বিশ্ব জুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। ফলে আগামী নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, রাজনৈতিক দলগুলো যেন অবাধে সভা সমাবেশ করতে পারে, সে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের বক্তব্য ভালোভাবে নিচ্ছে না সরকার। কূটনৈতিকরা যেন ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলেন সে বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের প্রতি কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
কূটনীতিকরা যেকোনো বিষয়ে পরামর্শ দিতে চাইলে সেটি যেন সরাসরি সরকারকে দেওয়া হয়, সে বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বহির্বিশ্বের কূটনৈতিকদের কোনো প্রশ্ন না করতেও আহ্বান জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এ আহ্বান জানিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, অনেকেই বিদেশিদের কাছে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার জন্য রাশিয়ার ২০/২১ জন কূটনীতিককে সে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) শক্তিশালী দেশ বলে অনেক কিছুই পারে। আমাদের সেই শক্তি নেই বলে আমরা এই পথে যাই না। তবে সময় হলে আমরাও বিদেশিদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাব।
আফগানিস্তান, চিলি ও ইরানের উদাহরণ দিয়ে বিশ্বে যখনই কোনো দেশে বিদেশি হস্তক্ষেপ হয়েছে, তখনই সেসব দেশের ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আপনার মতামত লিখুন :