ঢাকা ০৬ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে লোকসভা নির্বাচন : এবার জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি নরেন্দ্র মোদির


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : জুন ৬, ২০২৪, ৩:৩২ অপরাহ্ণ / ২৭২২০
ভারতে লোকসভা নির্বাচন : এবার জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি নরেন্দ্র মোদির

হার-জিত রাজনীতির অঙ্গ। কখনো জয় হবে, কখনো হার। এই খেলাই নিরন্তর। এতে ভেঙে পড়লে চলবে না। গতকাল বুধবার সকালে বিদায়ী মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেওয়া ভাষণে এ মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেন, ‘টানা ১০টা বছর আমরা চমৎকার কাজ করেছি। আগামী দিনেও সেই ধারা অব্যাহত রাখব।’

মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকেই মোদিকে আবার সরকার গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। রাত পৌনে আটটায় শরিকদের সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রিসভা গড়ার দাবি জানিয়ে আসেন। নতুন সরকার গঠন পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী তিনি কাজ চালিয়ে যাবেন। বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, নতুন সরকার শপথ নেবে ৮ জুন শনিবার। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিদায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের গতকাল রাতে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে শুরু হয় এনডিএর বৈঠক। তাতে যোগ দিতে দিল্লি চলে আসেন বিহার থেকে নীতীশ কুমার, চিরাগ পাসোয়ান, হায়দরাবাদ থেকে চন্দ্রবাবু নাইডু, লক্ষ্ণৌ থেকে জয়ন্ত চৌধুরী, মুম্বাই থেকে একনাথ শিন্ডের মতো ২১ জন নেতা। তাঁরা সবাই সরকারকে সমর্থনের চিঠি নিয়ে হাজির। সেখানেই সবাই সর্বসম্মতিক্রমে নেতা হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে মেনে নেন। সেই বৈঠকেই মোদি জানান, গুরুত্বপূর্ণ শরিক নেতাদের সঙ্গে নিয়েই তিনি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে সরকার গড়ার দাবি পেশ করবেন।

এই প্রথম নরেন্দ্র মোদিকে কোয়ালিশন সরকার চালাতে হবে। এই অভিজ্ঞতা তাঁর কখনো হয়নি। মন্ত্রিসভায় কে কোন দপ্তর পাবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোয়ালিশন বা জোট সরকারে সাধারণত দেখা গেছে, প্রধান শরিক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় যেমন অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজের কাছে রাখে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারেও মনমোহন সিং এই তিন মন্ত্রণালয় ধরে রেখেছিলেন। এবারও এই তিন দপ্তর বিজেপি কাছছাড়া করবে না। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর হলো প্রতিরক্ষা, কৃষি, রেল, গ্রামোন্নয়ন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রণালয়। তথ্য ও সম্প্রচার এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দুই প্রধান শরিক নীতীশ কুমারের জেডিইউ ও চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপিসহ অন্য শরিকেরা কোন দপ্তর পেয়ে সন্তুষ্ট থাকেন, দু-এক দিনের মধ্যেই তা স্পষ্ট হবে।

এবার ভোটে নীতীশের দল বিহারের ৯৪ লাখ গরিব পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই অর্থের জোগানে যাতে টান না পড়ে, সেই দাবিও তিনি মোদির কাছে রাখবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।

চন্দ্রবাবু নাইডুর দাবিও অন্তত তিনটি ‘ভালো’ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে লোকসভার স্পিকারের পদ। তেলেগু দেশমের সদস্য জি এম বালাযোগী ১৯৯৮ সালের জোট সরকারের সময় লোকসভার স্পিকার হয়েছিলেন। ২০০২ সালের মার্চ পর্যন্ত সেই দায়িত্ব তিনি দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছিলেন। সেই মাসেই রাজ্যে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। একই রকম চিরাগ পাসোয়ান, জয়ন্ত চৌধুরী, একনাথ শিন্ডেদেরও খুশি রাখতে হবে মোদিকে।

‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক

গতকাল বিকেলে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বসে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক। বিরোধী নেতাদের প্রত্যেককে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকে এক জোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। জনতার রায় পুরোপুরি মোদির বিরুদ্ধে। এটা তাঁর রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। খাড়গে বলেন, জনতার রায় বুঝিয়ে দিয়েছে সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষায় দেশ জোটবদ্ধ।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031