ঢাকা ০৪ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ভৈরবের বিরামপুর পাগলাদহ অংশে যথেচ্ছা বালু উত্তোলনের কারনে ঝুকিতে ব্রিজ কালভার্ট আর দুই পাড়ের বাড়িঘর


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২০, ২০২২, ১:১৫ পূর্বাহ্ণ / ২৭২২০ ০
ভৈরবের বিরামপুর পাগলাদহ অংশে যথেচ্ছা বালু উত্তোলনের কারনে ঝুকিতে ব্রিজ কালভার্ট আর দুই পাড়ের বাড়িঘর

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :  একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট ভৈরব নদের বিরামপুর ও পাগলাদহ অংশে যথেচ্ছা বালু উত্তোলন করে বিকিকিনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে ওই এলাকার ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলের ব্রিজটি এবং দুই পাড়ের বাড়িঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
চক্রটি এলাকার নিচু জমি, পুকুর ভরাট করার চুক্তি করে এই বালি উত্তোলন করে চলেছে স্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে। ব্রিজের ঠিক নিচেই মেসিন বসিয়ে এই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকার সাগরের নেতৃত্বে তপু, জীবন ,বিপুল, অসীম এই সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছেন একজন মেম্বার। স্থানীয় লোকজন এ ব্যাপারে বড় ধরণের অঘটন ঘটার আগেই দ্রুত পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ভৈরব নদ খননকে পুঁজি করে ড্রেজার মেসিন বসিয়ে গত বছর বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন ব্যবসা শুরু করে একাধিক সিন্ডিকেট। যশোরের শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় ভৈরব নদের অদুরে থাকা পুকুরগুলো একে একে ভরাট করা হয়। সুবিধাবাদী পুকুর মালিকগন বিকল্প মুনাফার আশায় ভৈরব নদ খননে ব্যবহার হওয়া ডেজ্রার মেশিন ব্যবহার করেন। ব্যক্তি স্বার্থে ডোবা নিচু জমি ও পুকুর ভরাট হয়েছে।  গত বছরের বিভিন্ন সময়েও ভৈরবের বুকে ডেজ্রার চালিয়ে বালি ওঠানোই ভূমি ধ্বসেরও শঙ্কা করেছিলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে যশোরের পুরাতনকসবা ঘোষপাড়ার মানুষ ছিলেন বেশি শঙ্কায়। বালি উত্তোলনের কারণেই গত বছরের ৫ ও ৬ জুলাই ঘোষপাড়ার বাড়িঘর ভেঙে নদে পড়ে যায়। ওই বছর জুড়ে ঠিকাদার নিযুক্ত লোকজন ও কয়েকটি দালাল চক্রের লোকজনের মধ্যস্থতায় অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হয়। ভৈরব নদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা ড্রেজার মেশিন দিয়ে দীর্ঘ পাইপ লাগিয়ে বালি কাঁদা মাটি তুলে পুকুরগুলো ভরাট করা হয়। আর ওই ভরাট কার্যক্রম করতে গিয়ে পাশের গ্রামগুলোর বাড়ি ঘরের তলদেশ মাটি বালি শূণ্য হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। ওই সব সিন্ডিকেটে নদ খননে নিযুক্ত ঠিকারদারের লোকজন জড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি যশোরের বিরামপুর ও পাগলাদহ ব্রিজকে ভয়ানক ঝুঁকিতে ফেলে ব্রিজের নিচে মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করছে চিহ্নিত সিন্ডিকেট। দলীয় সেল্টারে থাকা ওই চক্রটি বিগত কয়েক মাস ওই অপকর্ম করে চলেছে। সাগরসহ ওই চক্রটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এলাকায় নদের বালি বেচাকেনা করছে। এ ঘটনায় বিরামপুর ও পাগলাদহে নদ পাড়ের লোকজন বাড়ি ঘর ভূমি ধ্বসের শঙ্কা করছেন। একাধিক ব্যক্তি  ফোন করে এই শঙ্কার কথা জানালে  এই প্রতিবেদক সরেজমিনে বালি উত্তোলন কার্যক্রমের সত্যতাও দেখতে পান।  এর আগে ভৈরব থেকে ১শ’ মিটার পর্যন্ত ১৬ ফিট গভীর করে মাটি ও কাঁদা বালি উত্তোলন করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও তাদের নিযুক্ত লোকজন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করেছেন। একদিকে সরকারের কাছ থেকে ভৈরব খনন বিল উত্তোলন করেছেন, আবার ভরাট করে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আর সাগর সিন্ডিকেট পাউবোর ঠিকাদারের কোনো লোক নয়। তাদের কোনো অনুমতিও নেই। সেরেফ ব্যবসা করতেই এরা বালি উত্তোলন ও পুকুর ভরাট করে কাড়িকাড়ি টাকা আয় করছেন। তারা লাভবান হলেও ব্রিজ ও দুই পাড়ের বাড়ি ঘর ঝুঁকিতে রয়েছে। কাজেই দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করার দাবি স্থানীয়দের।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদের সাথে কথা বললে তিনি    বলেন, যথেচ্ছা বালু উত্তোলন পরিবেশের জন্য ঝুঁকি স্বরুপ। পুকুর ভরাট করাও আইনগত বিধি নিষেধ রয়েছে। ভূমি ধ্বসের ঝুঁকিও থাকে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে খোঁজখবর নেয়া হবে এবং নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031