ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

মারা গেলেন ছুরিকাঘাতের শিকার বেজপাড়ার আসাদ


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২২, ২০২২, ৮:২৪ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
মারা গেলেন ছুরিকাঘাতের শিকার বেজপাড়ার আসাদ

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :  চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতের শিকার একাধিক মামলার আসামি বহু বিতর্কিত বেজপাড়ার আসাদুজ্জামান আসাদ ওরফে বুনো আসাদ। তিনি যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ২১ নভেম্বর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এলাকার শান্তি কমিটিতে আধিপত্য দ্বন্দ্বে এই হত্যাকান্ড বলে পরিবারের দাবি। এর আগে হত্যাচেষ্টা ঘটনায় অভিযুক্তরা ছাড়াও ঘটনায় আরো কয়েকজন জড়িত বলেও তাদের দাবি।
৮ নভেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় যশোর শহরের বেজপাড়া সাদেক দারোগার মোড়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন বুনোপাড়ার মোহাম্মদ আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ। এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। ওই সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে অবস্থার অবনতি হয়। ওইদিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

তার ছোট ভাই সাঈদুর রহমান জানিয়েছেন, টানা দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ নভেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে তাকে অপারেশন করার সময় মারা গেছেন আসাদুজ্জামান। বুকে রক্ত জমাট বেঁধে থাকার কারণে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এমনটি তাদের জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে, ছুরিকাঘাতের দিন রাতেই আসাদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা মিডিয়া ও পুলিশকে জানায়, এলাকার চিহ্নিত কানুর নির্দেশনায় খাবড়ি হাসানসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন তাকে ছুরিকাঘাত করেছে হত্যার উদ্দেশ্যে। আর হত্যাচেষ্টা ঘটনার পরের দিন তার ভাই সাঈদুর রহমান ৪ জনের নাম উলে¬খ করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। আসামি করা হয় শহরের বেজপাড়া কবরস্থানের পিছনে মাঠপাড়ার হাসান ওরফে খাবড়ি হাসান, বেজপাড়া বনানী রোডের চঞ্চল ওরফে বস্তা চঞ্চল, একই এলাকার খোকনের ছেলে আকাশ ওরফে ফাও ও চাঁচড়া রায়পাড়ার বিপ্লব হোসেনকে। এই আসামিরা কেউ আটক হয়, কেউ আত্মসমর্পণ করে। আর এর মধ্যে গতকাল মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন বুনো আসাদ নামে পরিচিত বেজপাড়ার আসাদুজ্জামান আসাদ।
এ ব্যাপারে নিহত আসাদের বেজপাড়ার বাড়িতে গেলে হৃদয় বিদারক পরিবেশ চোখে পড়ে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিহতের বড় ভাই মাসুদুর রহমান ও ছোট ভাই সাঈদুর রহমান শাহীন গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, মুলত এলাকার শান্তি কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেব লীগ নেতা হিসেবে শান্তি কমিটিতে আসাদুজ্জামানের বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এতে করে পাড়ার ইন্দ্রজিৎ মুখার্জী ওরফে কানুর গাত্রদাহ শুরু হয়। কাস্টমসে কাজ পেয়ে টাকার মালিক হয়ে সে শান্তি কমিটিসহ এলাকায় অনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। আর তার নির্দেশনায় খাব্বির হাসান, বস্তা রিপন, সুমন, পিটনসহ অন্যরা এই হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। কানু মুখার্জীর নীল নকসা অনুযায়ী এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। তারা দ্রুত কানুসহ জড়িতদের আটক করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এর আগে যে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে সেটা এখন হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হবে। ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যতœসহকারে মামলাটি  তদন্ত ও আসামি আটক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিহত আসাদের বিরুদ্ধেও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ আল মামুন জানিয়েছেন, বুনো আসাদ ছুরিকাহত হওয়ার পর পুলিশ প্রথমে চঞ্চল নামে একজনকে আটক করে। এছাড়া অপর আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেয়। এরপর অপর আসামি হাসানকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়। বর্তমানে সে কারাগারে আটক রয়েছে। আগামী ২৩ নভেম্বর এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031