টেলিগ্রাম রিপোর্ট : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নিজভূমে ফিরতে চান। এজন্য মিয়ানমারকে তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, নিজেদের বসতভিটায় পুনর্বাসন করার দাবি জানান। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চান বস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকজন।
রোহিঙ্গা-পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসকে কাছে পেয়ে এসব দাবি জানান রোহিঙ্গা নেতারা। এ সময় নিজেদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক জান্তার হত্যা, নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন রোহিঙ্গারা।
কুতুপালং এলাকায় ২০টির বেশি ক্যাম্পে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করছে মিয়ানমার থেকে আসা ৯ লাখের মতো রোহিঙ্গা। সকালে ক্যাম্পে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সুবিধা-অসুবিধা, মিয়ানমার ফিরে যেতে রাজি কিনা সেসব বিষয় জানতে চান।
ক্যাম্পের একজন নেতা গণমাধ্যমকে জানান, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, ক্যাম্পে থাকার পরিবেশ, নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন? মিয়ানমারের অবস্থা জানতে চাওয়ার পাশাপাশি তারা ফিরে যেতে চায় কিনা সে প্রশ্নও করেছেন মার্কিন মন্ত্রী।
জবাবে রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরে যেতে আগ্রহের কথা জানালেও বেশ কিছু শর্ত তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গারা মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার আগে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত করা জায়গায় তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হস্তক্ষেপও চান তারা।
রোহিঙ্গাদের মুখে ভয়াবহতার কথা শুনে এবং দেশটিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখবে বলে আশ্বাস দেন মার্কিন মন্ত্রী।
রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বলেছেন মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মানবিক সেবায় রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে দেশটি।
জানা গেছে, প্রথমে তিনি ক্যাম্প-৯–এর সার্ভিস সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ পরিদর্শন শেষে সেখানে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস।
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (ক্যাম্প ইনচার্জ) মো. খালিদ হোসেন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু সেখানে কী কথা হয়েছে, তিনি জানেন না।
আপনার মতামত লিখুন :