টেলিগ্রাম রিপোর্ট : ধান-চালের সরবরাহে জড়িত সব পক্ষের মধ্যে সময় ও শ্রম দুটোই বেশি দেন কৃষক। কিন্তু মুনাফার ভাগ সবচেয়ে কম পান সেই কৃষকরাই। প্রচলিত বিপণন ব্যবস্থায় লাভের সিংহ ভাগই ঢুকছে মিলারদের পকেটে। এক কেজি চাল বিক্রি করে তারা মুনাফা করছেন ৮ থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) পরিচালিত এক গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
কী রোদ, কী বৃষ্টি! ফসলের মাঠে কৃষকের হাড়ভাঙা শ্রমের দৃশ্য নিত্যদিনের। তাইতো নানা সংকটেও খাদ্য উৎপাদনের বৈশ্বিক সূচকে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ।
কিন্তু যাদের ত্যাগে এই সাফল্য আর অর্জন, লাভের ভাগে যুগ-যুগ ধরেই তারা থাকছেন বঞ্চিত। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কৃষক ঠকানোর সেই করুণ চিত্র।
সম্প্রতি এমনই এক খবর দিলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। সারাদেশে জরিপ চালিয়ে তারা দেখিয়েছে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত আসতে ধান-চালের যে কয়টি হাতবদল হয়, এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেন মিল মালিকরা। কেজিতে তাদের লাভ ৮ থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত। অথচ কৃষক পান যতসামান্য।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির বলেন, যে লাভের কথা বলা হচ্ছে তা ৮ থেকে ১৪ টাকা এটা ঠিক আছে, আমাদের যে রিপোর্ট সেই রিপোর্টে এটা এসেছে। সবাইকে টিকে থাকতে হবে। একটি গ্রুপ যদি বেশি লাভ করে আর কৃষক যদি ধান উৎপাদন না করে, তাহলে বাজারে অন্য ব্যবসায়ী যারা আছে তারাও কিন্তু টিকতে পারবে না।
বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের এই কারসাজি নতুন নয় তবে তা না থামার পেছনে সরকারের দুর্বল নজরদারি ব্যবস্থাকেই দুষছেন অর্থনীতিবিদরা।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, মিলাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ায় এবং বাজারটাকে প্রভাবিত করে। কিন্তু সেই বিষয়ে আমাদের খাদ্য বিভাগ ও খাদ্য মন্ত্রনালয় যে হস্তক্ষেপ করে তা যথেষ্ট নয়। তাই সরকারের হস্তক্ষেপ যদি না বাড়ানো যায় তাহলে মিলারদের এই কারসাজি এবং অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন বন্ধ করা যাবে না।
উৎপাদক ও পাইকারসহ সব পক্ষের একটি নির্দিষ্ট ভাগ রেখে সম্প্রতি কৃষিপণ্য বিপণন বিধিমালা-২০২১ জারি করে সরকার। তবে এর বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
আপনার মতামত লিখুন :