ঢাকা ১৩ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

যশোর মনিরামপুরে শিক্ষাবর্ষে দুই শিক্ষার্থীকে পড়াতে প্রায় ১৬ লাখ টাকা পাচ্ছেন চার শিক্ষক


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৪, ২০২২, ৯:১০ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
যশোর মনিরামপুরে শিক্ষাবর্ষে দুই শিক্ষার্থীকে পড়াতে প্রায় ১৬ লাখ টাকা পাচ্ছেন চার শিক্ষক

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :   যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসা। আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ২ জন। ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ২ জন। আর ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থীই ছিল না। ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ পাশ করেনি। এভাবেই দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বিজ্ঞান বিভাগ চলছে। অথচ ওই বিভাগে চারজন শিক্ষক প্রতিমাসে ১ লাখ ৩১ হাজার ২৭১ টাকা বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নূর আলম নামে একজন অভিভাবক। প্রতি বছরে ওই চারজন শিক্ষক পাচ্ছেন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২ টাকা।
তিনি যশোরের জেলা প্রশাসক, জেলা অফিস ও মাদ্রাসা অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে অভিযোগটি করেছেন। কিন্তু দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ওই চারজন শিক্ষক হলেন পদার্থ বিজ্ঞানের ভবেন্দ্রনাথ, রসায়নের জবেদ আলী, জীববিজ্ঞানের ফাতেমা খাতুন ও গণিতের সুপ্রভাত কুমার পাল।
অভিযোগে নূর আলম জানান, ১৯৯৫, ২০১৮ ও ২০২১ সালের নীতিমালা অনুযায়ী কোন বিভাগে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকলে শিক্ষাবোর্ড থেকে সেই বিভাগের একাডেমী স্বীকৃতি নবায়ন করা হবে না। ওই অবস্থা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতিও বন্ধ করে দেয়া হবে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অথচ জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে কোন পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না। সব নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তারা রীতিমত মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকে একাডেমী স্বীকৃতি নবায়নও বাগিয়ে নিচ্ছেন। প্রতি শিক্ষাবর্ষে মাত্র ২ জন শিক্ষার্থীকে পড়াতে বছরে সরকারের ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২ টাকা গুনতে হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি সঠিক। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিজ্ঞান বিভাগে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই। দুই, একজন শিক্ষার্থী দিয়ে বিজ্ঞান চলছে। তার আগের অধ্যক্ষ বিজ্ঞান বিভাগের ওই চারজন শিক্ষককে লিখিতভাবে নোটিশও করেছেন। তারা লিখিত দিয়েছেন আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে তারা কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী যোগাড়ের চেষ্টা করবেন। সেই শর্তে তাদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড তো আর বিজ্ঞান শাখার একাডেমী স্বীকৃতি স্থগিত করেনি। সেইজন্য আমরাও বেতন-ভাতা বন্ধ করতে পারিনা। ঘটনাটি অধিদপ্তরও জানে। তারাও বেতন-ভাতা বন্ধ করার কোন নির্দেশনা দেয়নি।’
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আব্দুল গণি বলেন, ‘মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ডের কাছে সব তথ্য আছে। তারা বেতন-ভাতা বন্ধ করার নির্দেশনা দিলে দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।’
জেলা শিক্ষা অফিসার একে গোলাম আযম জানান, ‘এ ধরণের একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। মণিরামপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডকে লিখিতভাবে জানাতে পারবো।’

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031