ঢাকা ১৩ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান লড়াইয়ের আগেই টানটান উত্তেজনা


টেলিগ্রাম রিপোর্ট প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৯, ২০২২, ৭:১৯ অপরাহ্ণ / ২৭২২০ ০
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান লড়াইয়ের আগেই টানটান উত্তেজনা

টেলিগ্রাম রিপোর্ট :  পৃথিবীতে বিতর্ক ছাড়া কিছু হয় না। বিতর্ক হয় সদরে, অন্দরে। বিশ্বকাপও যে বিতর্কের ঊর্ধ্বে তা মোটেই না। ১৯৩০ থেকে ২০২২ বিতর্ক হয়নি এমন নয়। বহুবার বিতর্ক হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও অনেক দেশ বিশ্বকাপ বর্জন করেছে। তবে বিশ্বকাপে সাধারণত বিতর্ক হয় খেলার রেফারিকে নিয়ে। গ্যালারিতে মারপিট নতুন কোনো ঘটনা নয়। কাতার বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে গোড়া থেকেই বিতর্ক ছিল। তা আয়োজনে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

কিন্তু হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের এক রাজনৈতিক বিতর্ক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। দেশ দু’টির  সম্পর্কের অবনতি কয়েক যুগ ধরে। এবারের বিশ্বকাপে মঙ্গলবার দল দুটি বাঁচা-মরার এক লড়াইয়ে নামছে। খেলার আগেই টানটান উত্তেজনা। বিতর্কের সূত্রপাত ইউএস সকার  ফেডারেশনের একটি পদক্ষেপে। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতীক ছাড়াই সোশ্যাল মিডিয়াতে জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করায় খেলা ঘিরেই সব বিতর্ক। ইরান বলেছে, জাতীয় পতাকা থেকে আল্লাহর নাম মুছে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটা গর্হিত কাজ। ফিফা’র নীতি বিবর্জিত এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। এর প্রতিবাদে ইরান ফিফা’র কাছে চিঠি লিখেছে। বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে অন্তত বিশ্বকাপের ১০টি খেলা থেকে বহিষ্কার করা হোক। আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ ও বিতর্কের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইটে ইরানের পতাকায় প্রতীকটি যুক্ত করা হয়। যদিও এতে বিতর্ক থামেনি। মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম বিশ্বকাপে এটা একটি রাজনৈতিক বিতর্কে পরিণত হয়েছে। ফুটবল পণ্ডিতদের অনেকেই মনে করেছিলেন মাঠের বাইরের বিতর্ক হয়তো কাতার বিশ্বকাপের উপর কোনো ছায়া ফেলবে না। এটা কি সম্ভব? অতীতের অভিজ্ঞতা তো তা বলে না। খেলার ঊর্ধ্বেই যতসব রাজনৈতিক বিতর্ক। মঙ্গলবার আল থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ম্যাচটি দু’দেশের জন্য কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। এই লড়াইয়ে দু’দলকেই জিততে হবে। শেষ ১৬তে উঠতে যুক্তরাষ্ট্রের জেতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর ইরান জিতলে তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে উঠবে দেশটি। যদিও টাই হয়ে আছে। ইরান জিতলে ওয়েলস এবং ইংল্যান্ডের সঙ্গে যাই ঘটুক তাতে ইরান এগিয়ে যাবে। ইউএস সকার ফেডারেশন রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ইরানের মহিলাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টগুলোতে সরকারি পতাকা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়া ইউএস পুরুষ দলের টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ব্যানার প্রদর্শন করা হয়েছে। যেখানে দেখানো হয়েছে ইরানের পতাকায় শুধুমাত্র সবুজ, সাদা এবং লাল রঙ। স্মরণ করা যায় যে, ১৯৯৮ সনে দেশ দুটি ফ্রান্স বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল।
ওদিকে ইরানের বার্তা সংস্থা আইএসএনএ ইরানের ফুটবল ফেডারেশনের উপদেষ্টা সাফিউল্লার বরাতে জানিয়েছে, পতাকা সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপগুলো  ফিফা প্রতিযোগিতা আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যুক্তরাষ্ট্রকে এজন্য দায়ী করা উচিত। ১৯৮০ সনে ইরান প্রজাতন্ত্রের প্রতীক ডিজাইন করা হয়। তার মধ্যে এক তলোয়ারসহ চারটি বক্র রেখা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে পতাকার উপর ‘আল্লাহ মহান’  লেখা সংবলিত ২২টি শিলালিপি। দেখা যাক, বাইরের এই বিতর্ক খেলার মাঠে কোনো প্রভাব ফেলে কি-না। তবে এই খেলায় যাতে কোনো অঘটন না ঘটে এজন্য সতর্ক ফিফা, সতর্ক আয়োজক দেশ কাতার। এজন্য অবশ্য নিরাপত্তা  ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তায় কোনো ফাঁকফোকর নেই। দু’ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এবার বিশ্বকাপে মাঠের বাইরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, শান্ত।

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031