টেলিগ্রাম রিপোর্ট : রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং বিচক্ষণতায় শেখ হাসিনা যে অন্য সব রাজনৈতিক নেতার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে, তা তিনি বিভিন্ন সময় প্রমাণ করেছেন। এবার তিনি আরেকবার সেটি প্রমাণ করলেন। বিএনপির নয়াপল্টনের সমাবেশ করাকে এখন কূটনৈতিক মহল একটি জেদ হিসেবে দেখছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারা সমাবেশ কেন করবে না, তা নিয়েও কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। আর এটির ফলে কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি যে একটি সখ্যতা গড়ে তুলেছিলো এবং তাদের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির যে কৌশল অবলম্বন করেছিলো তা অনেকটাই ভেস্তে যেতে বসেছে। এর কারণ একটাই, তা হলো শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল। সেই কৌশলের কাছে বিএনপি আরেকবার ধরাশায়ী হয়ে গেল। বিএনপি ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করার জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছে একটা আবেদন করে। সেই আবেদনে তারা ১০ তারিখে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে বিলম্ব করা হয়। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশনা দেন এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেন বিএনপি নির্বিঘ্নে করতে পারে সে ব্যাপারেও কিছু নির্দেশনা দেন।
বিএনপির সমাবেশকে সফল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সম্মেলন দুইদিন এগিয়ে আনেন যেন ছাত্রলীগ তাদের মঞ্চ ভেঙ্গে ফেলার পর্যাপ্ত সময় পায় এবং মঞ্চ ভেঙে ফেলার পর বিএনপি মঞ্চ নির্মাণের সময় পায়। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মহাসমাবেশের সময় কোনো রকম পরিবহন ধর্মঘট না ডাকারও আহ্বান জানান। পরিবহন ধর্মঘট না ডাকার সিদ্ধান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়। একই সাথে আওয়ামী লীগ সভাপতি এই সমাবেশের সময় যেন কোনো পাল্টা সমাবেশের কর্মসূচী না দেওয়া হয় সে ব্যাপারেও নির্দেশনা প্রদান করেন। এসবের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ বিএনপির সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না এবং রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছে এই বার্তাটি কূটনীতিকদের কাছে যায়। কূটনীতিকরা এই বার্তাটিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির এরকম উদারতার পর যখন বিএনপি নয়াপল্টনের সমাবেশ নিয়ে অনড় অবস্থানে আছে তখন কূটনীতিকরা বিএনপির সমাবেশের যৌক্তিকতা এবং আসল কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন যে, নয়াপল্টনে কেন সমাবেশ করতে হবে? বিএনপি কি তাহলে রাজনৈতিক সহিংসতা করতে চায়?
আপনার মতামত লিখুন :