রঘুনাথ খাঁ,সাতক্ষীরা ঃ যারা এক সময় ভূমিহীন আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন তাদের অনেকেই এখন ভূমিদস্যুদের কাছের মানুষ। ফলে খলিষাখালিতে উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা থাকা জমি থেকে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করার জন্য ভূমিদস্যুরা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় ফজলু মোড়ল, বাবলুর রহমানকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ৫৪ পিস ইয়াবা দিয়ে দেবহাটা থানায়, সাইফুলকে বদরতলা বাজার থেকে তুলে নিয়ে ৮০ পিস ইয়াবা দিয়ে আশাশুনি থানায় মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। নোড়ারচকের ইউনুস আলীকে গত ৩ নভেম্বর বদরতলা মাসের সেট থেকে তুলে নিয়ে পারুলিয়া জেলেপাড়া থেকে ওয়ান শুটারগান ও দুই রাউণ্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। একই দিনে আদালত থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে নিরাপত্তা দেওয়ার নাম করে শরিফুল, কামরুল ও মুর্শিদকে তুলে নিয়ে পরদিন ওয়ানশুটার গান ও ৫ রাউণ্ড গুলিসহ ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন জেলে পাঠানো হয়েছে। ১৫ নভেম্বর সকালে জনমানবশূন্য খলিষাখালিতে পুলিশের উপস্থিতিতে বোমা ও গুলি ছুঁড়ে ত্রাস সৃষ্টি করে ভূমিদস্যু আজিজ, কাজী গোলাম ওয়ারেশ, ডাঃ নজরুল,আহছানিয়া মিশনের কর্মী ইকবাল মাসুদের নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা খলিষাখালির ১৩২০ বিঘা জমিতে বসবাসকারি ৭৮৫টি ভূমিহীনের ঘরবাড়িতে লুটপাট ও ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ছাড়া নোড়ারচক ও চালতেতলার ১৫টির বেশি বাড়িতে গবাদিপশুসহ ব্যবহার্য সকল সম্পদ লুটপাট করে বাড়ি ভাংচার করেছে ওই ভূমিদস্যুরা। ভূমিহীন নেতা রবিউলকে কালিগঞ্জের নলতা বাজার থেকে ভূমিদস্যুরা ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। দেবহাটা থানায় তাকে দ্বিতীয় দফায় নির্যাতন করার পর মিথ্যা অস্ত্র ও ডাকাতির চেষ্টা মামলাসহ চারটি মামলায় জেলে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই দিনে ঢাকার আনন্দ সিনেমার পাশ থেকে ইসমাইল মেম্ববরকে তৃুলে এনে ৭৬ ঘণ্টা পর অস্ত্র ও ডাকাতির চেষ্টা মামলাসহ তিনটি মামলায় জেলে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন করায় একাধিক সাংবাদিক পড়েছেন পুলিশের রোষানলে।
সাইফুল¬াহ লস্করের হত্যার বিচার হলে প্রশাসনের সহায়তায় ভূমিদস্যুরা ভূমিহীনদের উচ্ছেদ না করা সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এ ধরণের দমন পীড়ন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাতে পারতো না বলে মনে করেন ৬৮ বছর বয়সী সুরাইয়া আক্তার। নিজের স্বামীর ১৩তম মৃত্যু বার্ষিকীতে রবিবার সকালে নিজ বাড়িতে কথোপকথনের একপর্যায়ে এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন সুরাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, তার স্বামীকে হত্যা না করলে খলিষাখালির ভূমিহীনদের উচ্ছেদের ঘটনায় কঠোর আন্দোলন গড়ে উঠত।
এদিকে সাইফুলাহ লস্করের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠণ সোমবার সকালে মরহুমের কবর জিয়ারত ও স্মরণসভাসহ বিভিন্ন কর্মসুচি হাতে নিয়েছে।
সাতক্ষীরার একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দেবহাটার নোড়ারচকে সাবেক যুবদল নেতা নাসিম ফারুখ খান মিঠু ও ইউসুফ আব্দুলাহ’র ইজারাকৃত জলমহল ভূমিহীনরা দখলে নেওয়ায় ভূমিদস্যুরা সাতক্ষীরা থেকে ভূমিহীন আন্দোলন মুছে ফেলার জন্য দু’টি বড় এনজিও প্রধানের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশ ও ভূমিদস্যুরা শহরতলীর একটি বাগান বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করে। ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর রাতে তৎকালিন পুলিশ সুপার এসএম মনিরুজ্জামান (বর্তমানে অবসরে), সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান ছয় মাস আগে নির্বাচিত সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়ে সাংবাদিকদের কাছের মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। আগে থেকে সাইফুলাহ লস্করের হত্যার মিশনের পরিকল্পনা করে নিজেকে নির্র্দোষ প্রমান করতে ৪ ডিসেম্বর তৎকালিন সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার এসএম মনিরুজ্জামান বেড়ানোর কথা বলে সাতক্ষীরার তৎকালিন জেলা প্রশাসককে নিয়ে কালীগঞ্জের বন্দকাটি গ্রামের কুখ্যাত হরিণ শিকারী সাত্তার মোড়লের লঞ্চে সুন্দরবনে রাত কাটান। রাতে সাত্তার মোড়ল ও তার সহযোগি পাতাখালির কুখ্যাত হরিণ শিকারী আব্দুল আজিজ প্রশাসনের দু’ কর্মকর্তার তাস খেলার অংশীদার ছিলেন বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে। সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দু’জেলা প্রধানের একইসাথে সুন্দরবন বিহার সাতক্ষীরার জন্য সেটাই ছিল প্রথম।
২০০৯ সালের ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির প্রশিক্ষণরত ্উপপরিদর্শক (টিএসআই) নজরুল ইসলাম ও সিপাহী শাহজালাল (কংনং-২৪৮) কৃষক সংগ্রাম সমিতির সহ-সভাপতি ও জেলা ভ‚মিহীন সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সাইফুলাহ লস্করকে কাটিয়া লস্করপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে বাইরে ডেকে আনেন।
পরদিন ভোরে আকবর লস্করের বাড়ির পুকুর পাড়ে কাঠ ও বিচালী রাখার ঘরের মধ্যে সাইফুলাহ লস্করের রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক মনোয়ারা খাতুন ২০০৯ সালের ৫ ডিসেম্বর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (৯২/২০০৯নং) করেন। মামলার তদন্তভার সদর থানার উপপরিদর্শক আব্দুস সবুরের(বর্তমানে প্রয়াত) উপর ন্যস্ত হয়। ৬ ডিসেম্বর রাতে জেলা জাপা নেতা ও ভ‚মিহীনদের পৃষ্টপোষক অ্যাড. আব্দুর রহিমকে আহবায়ক ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা শাখার সম্পাদক বর্তমানে সাংসদ অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুলাহকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট সাইফুলাহ লস্কর হত্যার বিচার বাস্তবায়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। পুলিশ সুপার এসএম মনিরুজ্জামান, সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম কামরুজ্জামান ও কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির শিক্ষানবীশ উপপরিদর্শক নজরুল ইসলামসহ যুবদল নেতা ভ‚মিদস্যু নাসিম ফারুক খান মিঠু, আশাশুনির শরাফপুরের ভ‚মিদস্যু প্রয়াত বসির আহম্মেদ, শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম (প্রয়াত), চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, ভ‚মিদস্যু নলতার মহব্বত মীর (প্রয়াত), ইউসুফ আব্দুলাহসহ হত্যাকারিদের গ্রেফতারের দাবিতে পরদিন সকালে বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে আপামোর জনতা শহীদ আলাউদ্দিন চত্বরে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এতে সারা সাতক্ষীরা অচল হয়ে পড়ে। কর্মসূচি পালনকালে সাইফুলাহ লস্করকে হত্যার পিছনে ভ‚মিহীনদের পৃষ্টপোষক সাতক্ষীরার দু’টি বড় বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) নির্বাহী পরিচালকের হাত আছে বলে সুধী সমাজের নেতৃবৃন্দ দাবি করেন । যা’ পরিদিন বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়। জনগনের আই ওয়াশ করতে কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির শিক্ষানবীশ উপপরিদর্শক নজরুল ইসলামকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয় । ক্ষুব্ধ সাতক্ষীরাবাসির দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন দিকে ঘোরাতে তৎকালিন জেলা পুলিশ সুপার এসএম মনিরুজ্জামান ২০০৯ সালের ৯ ডিসেম্বর রাতে দেবহাটার নোড়ারচকে ভ‚মিহীনদের হামলার শিকার হয়েছেন মর্মে কাল্পনিক নাটক তৈরি করে সখীপুর স্বাস্থ্য কমপেক্সে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরবর্তীতে শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে তৎকালিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি কমঃ রাশেদ খান মেনন শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে পৃথক সমাবেশে সাইফুলাহ লস্কর হত্যার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে সাইফুলাহ লস্করকে হত্যার যথার্থ পরিকল্পনাকারির পুরষ্কার হিসেবে এসএম মনিরুজ্জামান অতিরিক্ত উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) হিসেবে পদোন্নতি পান বলে আবাল বৃদ্ধ বণিতার মুখেমুখে উচ্চারিত হয়।
নিহতের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার বাদি হয়ে একটি এজাহার ৬ ডিসেম্বর থানায় জমা দিলে তা হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির শিক্ষানবীশ উপপরিদর্শক (টিএসআই) নজরুলসহ দু’জন পুলিশ ২০০৯ সালের ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাইফুলাহ লস্করকে তার বাড়ি থেকে ডেকে আনেন বলে মামলায় উলেখ করা হয়। পুলিশ ও সুবিধা বঞ্চিত ভ‚মিদস্যুরা সাইফুলাহ লস্করকে হত্যা করেছে মর্মে মামলায় বলা হয়। এ ছাড়া ঘটনার রাতে পুলিশ ও সাদা পোশাক পরিহিত কিছু লোকজন সাইফুলাহ লস্করের বাড়ির আশে পাশে অবস্থান করছিল বলে এজাহারে উলেখ করা হয়।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন উপপরিদর্শক সরদার মোশাররফ হোসেন ২০০৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর কালীগঞ্জের চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ব্নিপি’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক গাইন (৬৪) ও ২০১০ সালের ৩০ জুন সাতক্ষীরা শহরের থানাঘাটার আবু সাঈদ(৫৮) ওরফে নাক কাটা সাঈদকে গ্রেফতার করে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে তৎকালিন জেলা যুবদল নেতা নাসিম ফারুক খান মিঠু ও আশাশুনির শোভনালী ইউপি’র তৎকালিন চেয়ারম্যান ভ‚মিদস্যু শহীদুল ইসলাম(প্রয়াত) চার সপ্তাহের জন্য অর্ন্তবর্তীকালিন জামিন নেন। একই সময়ে সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত ভ‚মিদস্যু আশাশুনির সরাফপুরের বসির আহম্মেদ(প্রয়াত) ও আলীপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ একইভাবে হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন গ্রহণ করেন। পরে তারা আর জামিনের আবেদন বাড়ান নি। এমনকি আদালতের নির্দেশে নি¤œ আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করেননি।
একপর্যায়ে মামলাটির তদন্তভার পরিবর্তিত হলে ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা, অপরাধ ও তদন্ত সাতক্ষীরা শাখার পরিদর্শক আমির হোসেন আমু তদন্তভার বুঝে নেন। ৩১ জানুয়ারি সংস্থার খুলনা বিভাগীয় পুলিশ সুপার (সিআইডি) আব্দুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বাদিকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেন। এ ঘটনায় পরদিন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরে মামলার তদন্তভার ২০১২ সালে উপপরিদর্শক লস্কর জায়াদুল হক ও ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর মামলার তদন্তভার একই সংস্থার বাগেরহাট শাখার পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের উপর ন্যস্ত করা হয়। তদন্তকালে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বাদি ও তার স্বজনদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানির অভিযোগ ওঠে। সাড়ে চার বছরে সাতজন তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তণ করা হয়। মামলা থেকে বাঁচতে এসএম মনিরুজ্জামান প্রভাব খাটিয়ে তিন বছর আগে রাজশাহী থেকে খুলনা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করেন।
এদিকে সাইফুলাহ লস্কর হত্যার বিচার বাস্তবায়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সদস্যরা অধিকাংশই ক্ষমতাসীন ১৪ দলের সদস্য হওয়া, বাদি ও তার পরিবারের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব, অ্যাড. আব্দুর রহিমের মৃত্যু, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিঠু খানসহ সন্ধিগ্ধ হত্যাকারির সঙ্গে বাদির স্বজনদের ঘনিষ্টতা, অস্তিত্ব সঙ্কটে থাকা জেলা ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী নুর খান বাবলু দোষী এক পুলিশ কর্মকর্তার অর্থায়নে ২০১৩ সালে একটি সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের সঙ্গে স্বপরিবারে বনভোজনে সুন্দরবনে বেড়াতে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে লস্কর হত্যাকারিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন থেমে যায়। যদিও আলী নূর খান বাবুল তা অস্বীকার করেন। ২০১৪ সালে নামমাত্র স্মরণসভা করেই দায়িত্ব শেষ করে জেলা ভ‚মিহীন সমিতি। একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
চারটি ধার্য দিনে ভীতসন্ত্রস্ত বাদি পুলিশ ও ভূমিদস্যৃদের বিরুদ্ধে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিচার পাওয়া যাবে না এমন চিন্তা চেতনাকে মাথায় রেখে আদালতে নারাজির আবেদন দাখিল না করায় ২০১৮ সালের ২১ জুন মামলাটির কার্যক্রম চলে যায় হিমাগারে।
বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বিএম শামীমুল হক জানান, তারা বিচারের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।
এ ব্যাপারে জ্যেষ্ট আইনজীবী অ্যাড. নিজামউদ্দিন বলেন, ময়না তদন্তে কোন ব্যক্তির অস্বাবাভিক মৃত‚্যর কথা উলে¬খ করলে সেই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সূযোগ নেই। গনতান্ত্রিক দেশে এ ধরণের হত্যাসহ সকল হত্যার বিচার হওয়া উচিত। তবে বিচার পেতে হলে বিচারকার্যক্রমের সঙ্গে সকলের আন্তরিক হতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :