স্টাফ রিপোর্টার, যশোর / মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : ঈদের রাতে এমডি বিল্লালুর রহমান নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে এনে হকিষ্টিক দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মণিরামপু থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। বিল্লালুর রহমান গাজীপুর সরকারি কলেজ থেকে সদ্য মাষ্টার্স শেষ করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। ওই রাতে ইকবাল হোসেন নামের আরো এক যুবলীগ নেতাকেও ধরে এনে মারপিট করা হয় বলে স্বজনরা অভিযোগ করেন। যশোরের মনিরামপুর থানায় সদ্য যোগদানকারি ওসি (তদন্ত) পলাশ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ বলছে, আটককৃত দুই যুবক সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্র্র্র্যয’র ছবি সম্বলিত পোষ্টারের লেখার উপর কালি লেপটে দেওয়ায় অভিযোগ রয়েছে। এই কারনে গতকাল ঈূদের দিন রাতে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে মারপিট করে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ ওসি (তদন্ত) পলাশ বিশ^াস অস্বীকার করেছেন।
এমডি বিল্লালুর রহমান উপজেলার গোপালপুর গ্রামের নূর আলীর ছেলে এবং ইকবাল হোসেন মাছনা গ্রামের স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম ছেলে।
মারধরের শিকার বিল্লালুর রহমানের মা খাদিজা বেগম কাঁন্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ঈদের রাতে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ তার বড় ছেলে বিল্লাল বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। সাথে সাথে তারাও থানায় চলে আসেন। কি অপরাধে ছেলেকে ধরে আনা হয়েছে জানতে চাইলে পুলিশ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। ওই রাত থেকে আজ সকাল অবধি তারা থানার গোলঘরে ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ছেলের জন্য খাবার আনতে বাড়িতে যান। ফিরে এসে দেখতে পান হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় পুলিশের গাড়ি থেকে ছেলে বেলালুর কে নামানো হচ্ছে। এসময় পুলিশের কাছে জানতে চাইলে, তাদেরকে জানানো হয় তার ছেলের পেট খারাপ করায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখতে পান তার ছেলেকে মারধর করে হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। তিনি এঘটনার জন্য পুলিশের বিচার দাবী করেছেন।
মারধরের শিকার যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেনের বাবা তরিকুল ইসলাম বলেন, কে বা কারা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ছবিতে কালি লেপটে দিয়েছে। যার দায়ভার ছেলের উপর চাপিয়ে ঈদের রাতে বাড়ি থেকে থানায় তুলে এনে মারধর করে পুলিশ।
থানায় গিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে মারধরের শিকার এমডি বিল্লালুর রহমানের কথা হয়। তিনি জানান, থানার ওসি (তদন্ত) পলাশ বিশ্বাস হকিষ্টিক দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেছে।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) পলাশ বিশ্বাস মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, একজন সম্মানিত ব্যক্তির ছবি ও লেখার উপর কালি দেওয়ার অভিযোগে তাদেরকে ধরে আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা: অনুপ কুমার বসু বলেন, প্রাথমিক ধারনা করা হচ্ছে বিল্লালুর রহমানের বাম হাত ভেঙ্গে গিয়েছে। তবে এক্স-রে রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে এই ঘটনা ফাঁস হলে আজ বিকাল ৩টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও আহতদের স্বজনরা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, আটক দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :